নিম পাতা দিয়ে রূপচর্চা এবং ত্বকের যত্ন জেনে নিন
প্রিয় পাঠক আপনারা অনেকেই অনেক জায়গাই নিম পাতা দিয়ে রূপচর্চা এবং ত্বকের যত্ন সম্পর্কে জানার জন্য লিখে সার্চ করে খুঁজার পরো সঠিক তথ্য পান না। এই আর্টিকেল এর মধ্যে অনেক ধরনের তথ্য পাবেন। নিম পাতা দিয়ে রূপচর্চা জানার জন্য ভালো করে আর্টিকেলটি ভালো করে পড়বেন।
নিম পাতা দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় এবং নিম পাতা ও কাঁচা হলুদ মুখে দিলে কি হয় বিষয়ে জানার জন্য আর্টিকেলটি মনোযোগ সহ পড়বেন তাহলে আপনার সমস্যা দূর করতে পারবেন।
ভূমিকা
নিম পাতার উপকারিতা অনেক। নিম পাতা দিয়ে অনেক সমস্যা জনিত ব্যাধি ভালো হয়ে যায়। নিম পাতা যেমন রূপচর্চার কাজ করে তেমনি শরীর এর ত্বকের যত্ন নেওয়ার সমস্যা ধুর হয়ে যাবে। নিম পাতা চুলকানি চর্মরোগ এর জন্য বিশেষ কার্যকারী।
নিম পাতা দিয়ে রূপচর্চা
আমাদের বাড়ির আশেপাশে, আঙ্গিনায় নিমগাছ দেখতে পাওয়া যায়। নিম পাতা দিয়ে কি হয় নিম পাতার কি গুনাগুণ তা আমরা অনেকেই অজানা। নিম পাতা দিয়ে রূপচর্চা করার বিশেষ গুনাগুণ রয়েছে। রূপচর্চা করার জন্য মেয়েরা নিম পাতা ব্যবহার করে থাকে। নিম পাতা দিয়ে রূপচর্চা করার জন্য নিচে আরও বিস্তারিত জেনে নিন।
নিম পাতা দিয়ে ব্রণ দূর করার উপায়
আমাদের কারো ব্রণ হলে আমরা অনেক রকমের স্নো ব্যবহার করে থাকি কিন্তু কিভাবে নিমপাতা দিয়ে ব্রণ দূর করবো সেটা অনেকেই জানেন না। নিমপাতা দিয়ে ব্রণ দূর করা হলো একটি ঘরোয়া পদ্ধতি। বর্তমানে অনেকেই এই ঘরোয়া পদ্ধতিতে ব্রণ মেছতা দূর করতে চান এই জন্য নিমপাতা হলো প্রধান একটি উপায়। এই উপায়ে অনেকের ব্রণ মেছতা ভালো হয়েছে। নিম পাতা দিয়ে ব্রণ দূর করার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলোঃ
নিম পাতা দিয়ে ব্রণ দূর করার জন্য কিছু সতেজ নিমপাতা সংগ্রহ করে তা রোঁদে শুকিয়ে নিন। ভালোভাবে রোঁদে শুকানোর পর নিমপাতা গুঁড়ো করে নিতে হবে। নিমপাতার গুঁড়া গুলো অ্যালোবেরার পাতা থেকে জেল বের করে সেটিতে ভালোভাবে মিশিয়ে নিতে হবে। মিশানোর পর সেই জেলটি ভালোভাবে মুখে লাগিয়ে কমপক্ষে ১০-১৫ মিনিট রাখতে হবে। তারপর পরিষ্কার পানিতে মুখোমণ্ডল ধুয়ে নিতে হবে। আর এই নিয়মে প্রতিদিন ৭ দিন ব্যবহার করলে ব্রণ মেছতা ভালো হয়ে যাবে।
নিম পাতা বেটে মুখে দিলে কি হয়
নিমগাছ অনেক ঔষুধি একটি বৃক্ষ। নিমগাছের যেমন গুনাগুণ রয়েছে তেমন নিমপাতারও অনেক গুনাগুণ রয়েছে। নিম পাতা দিয়ে রূপচর্চা করার জন্য অনেকে নিমপাতা ব্যবহার করে। আবার অনেকে জানতে চাই নিম পাতা বেটে মুখে দিলে কি হয়? সে বিষয়ে নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলোঃ
নিম পাতা বেটে মুখে দিলে মুখোমণ্ডলের যতো ময়লা সব উঠে পরিষ্কার হয়ে যায়। সতেজ নিম পাতা বেটে মুখে দিলে ব্রণ মেছতা, ব্ল্যাকহেড এর মতো সমস্যা দূর করে। অতিরিক্ত তৈলাক্ত চেহারা নিমিষেই দূর হয়ে স্লিম এবং নরম হয়ে যায়। নিমপাতায় অ্যান্টি ব্যাক্টেরিয়াল উপাদান থাকার কারণে নিম পাতা বেটে মুখে দিলে অনেক সমস্যা দূর হয়ে যায়।
নিম পাতা দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায়
নিমপাতা খুবই উপকৃত একটি পাতা যা মানুষের রূপচর্চার কাজে লাগে, তাছাড়া নিমপাতা বিভিন্ন রোগের জন্য খুবই উপকারি। অনেকের চেহারাই কালো দাগ পরে যাই সেই দাগ মিশাতে নিম পাতার ব্যবহার অপরিসীম। অনেকে ফর্সা হওয়ার জন্য অনেক ক্রিম ফেসওয়াশ জাতীয় পদার্থ ব্যবহার করে থাকেন, কিন্তু সে সব ব্যবহার করে ত্বকের কি ক্ষতি হয় তা জানেন না। ফর্সা হওয়ার জন্য বিভিন্ন ক্রিম ফেসওয়াশ জাতীয় পদার্থ ব্যবহার করে মুখে ব্রণ বের হতে শুরু করে।
ব্রণ যেনো বের না হয় তার জন্য প্রাকৃতিক উপায়ে ফর্সা হওয়ার উপায় অবলম্বন করতে হবে। কিভাবে প্রাকৃতিক উপায়ে ফর্সা হওয়া যায় সে বিষয়ে আলোচনা করবো। তাহলে নিম পাতা দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন।
প্রাকৃতিক ভাবে ফর্সা হওয়ার জন্য প্রথমে কয়েকটি সতেজ নিম পাতা নিয়ে তা ধুয়ে ফেলুন, নিম পাতা গুলো মিশিন করে বেটে পেস্ট এর মতো করে নিতে হবে। নিমপাতার সেই পেস্ট এর মধ্যে ১-২ চামচ দই দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিতে হবে। মিশানো হয়ে গেলে আপনার মুখ ভালো করে পরিষ্কার পানিতে ধুয়ে নিতে হবে। নিমপাতার পেস্ট গুলো ভালো করে মুখো মণ্ডলে লাগিয়ে কমপক্ষে ১০ থেকে ১৫ মিনিট রাখতে হবে। তারপর পরিষ্কার পানিতে ভালো করে মুখ ধুয়ে নিতে হবে।
আর এই ভাবে এক সপ্তাহ মতো ব্যবহার করলে আপনার চেহারার পরিবর্তন দেখতে পাবেন। নিমপাতার পেস্ট ব্যবহার করার ফলে ব্রণ থাকলে তা দূর হয়ে যাবে মুখে ছোট ছোট গর্ত থাকলে ভালো হয়ে যাবে মেছতা, লোমের গড়ার ময়লা এবং ব্ল্যাকহেড এর মতো সমস্যা দূর করে আপনাকে ফর্সা করে তুলবে। আপনি চাইলে নিম পাতার পেস্ট এক দুই মাস ব্যবহার করতে পারেন। এর কোন সাইড ইফেক্ট নেই।
নিম পাতা ও কাঁচা হলুদ মুখে দিলে কি হয়
নিম পাতা ও কাঁচা হলুদ এই দুটোই হলো প্রাকৃতিক ভেষজ উপাদান। নিম পাতা ও কাঁচা হলুদে অ্যান্টি বায়োটিক হিসেবে কাজ করে। নিমপাতা ত্বকের ময়লা দূর করে, যদি প্রতিদিন নিম পাতা ব্যবহার করেন তাহলে চুলকানি, ব্রণ হবে না। নিম পাতা ও কাঁচা হলুদ এক সাথে মুখে দিলে ত্বকের জৈব টক্সিন নামক পদার্থ বের হয়ে যাই এবং অ্যান্টি বায়োটিক হিসেবে কাজ করে থাকে।
নিম পাতা তিতা জাতীয় হওয়ার কারণে নিমপাতার অনেক গুন রয়েছে। প্রতিদিন নিম পাতা ও কাঁচা হলুদ মুখে দিলে ফর্সা ভাব চলে আসবে। নিম পাতা ও কাঁচা হলুদ মুখে দিলে কি হয় সে বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো।
প্রথমে সতেজ কয়েকটি নিমপাতা নিয়ে বেটে নিতে হবে সাথে এক টুকরা কাঁচা হলুদ বেটে মিশিয়ে নিতে হবে। সেটিকে মুখে লাগিয়ে কমপক্ষে ১০-১৫ মিনিট রেখে উষ্ণ গরম পানিতে মুখ ধুয়ে নিতে হবে। সপ্তাহে দুই তিন বার ব্যবহার করলে দেখবেন মুখের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি হয়েছে।
এছাড়াও নিম পাতা বাটা এক চামচ, এক চামচ মুলতানি মাটি এবং এক চামচ লেবুর রস মিশিয়ে মুখে ব্যবহার করবেন কমপক্ষে ৩০ মিনিট রেখে ধুয়ে নিতে হবে, তাহলে মুখের পোড়া দাগ গুলো দূর হবে। এছাড়া নিম পাতা ও কাঁচা হলুদ এর সাথে মধু, অ্যালোবেরা জেল, চন্দন গুঁড়া এবং গোলাপ জল একি নিয়মে ব্যবহার করে আপনার চেহারা লাবণ্যময়ী করে তুলতে পারেন।
নিম পাতা দিয়ে ত্বকের যত্ন
নিম পাতা খুবই উপকারী। নিম পাতা দিয়ে ত্বকের যত্ন নেওয়ার উপায় এর গুরুত্ব অপরিহার্য। নিম পাতা দিয়ে ত্বকের যত্ন বিভিন্ন ভাবে নিয়ে থাকে। শরীরের ত্বকে ময়লা জমে চুলকানির সমস্যা দেখা দিতে পারে। নিম পাতা চুলকানির জন্য খুব উপকারী। নিয়মিত নিম পাতার রস খেলে চুলকানি, পোঁচড়া রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। শরীরের ত্বক সুস্থ রাখার জন্য নিম পাতা ব্যবহারে গুরুত্ব বজায় রাখে।
নিম পাতা দিয়ে গোসল করার উপকারিতা
আপনার যদি চুলাকানি পোঁচড়া হয়ে থাকে তাহলে নিম পাতা দিয়ে গোসল করুন। নিম পাতা দিয়ে গোসল করার উপকারিতা অনেক। চুলকানির জন্য মহা ঔষধ হলো নিম পাতা। নিম পাতায় অ্যান্টি মাইক্রোবিয়াল নামক উপাদান থাকায় ত্বকের চুলকানি সংক্রামক ব্যাধি সমস্যা ভালো করে। শরীরে চুলকানি বের হলে নিম পাতা সংগ্রহ করে পানিতে গরম করে ফুটিয়ে নিয়ে গোসল করার পানিতে ঢেলে কুসুম গরম পানিতে নিম পাতাসহ গোসল করবেন তাহলে চুলকানি দূর হয়ে যাবে।
নিম পাতা দিয়ে গোসল করার নিয়ম
মানুষের শরীরে সাধারণত গরমে আর শীতে চুলকানি দেখা দেয়। চুলকানি ভালো করার জন্য নিম পাতা দিয়ে গোসল করতে হবে। নিম পাতা দিয়ে গোসল করার নিয়ম আলোচনা করা হলোঃ
কিছু নিম পাতা নিয়ে পানিতে দিয়ে সেই পানি গরম করে ফুটাতে হবে। সেই নিম পাতার গরম পানি আলাদা পাত্রে ঢেলে ঠাণ্ডা পানি মিশিয়ে সে পানিতে গোসল করলে চুলকানি ভালো হয়ে যাবে।
লেখকের মন্তব্য
নিম পাতা অনেক উপকারী একটি পাতা। নিম পাতা দিয়ে রূপচর্চা করার জন্য কোনো সাইড ইফেক্ট নেই। নিম পাতা দিয়ে ত্বকের যত্ন নেওয়া যাই, চুলকানির মহা ঔষধ হলো নিম পাতা। নিম পাতা ব্যবহারে অনেক সমস্যা দূর করা যায়। নিম পাতা ব্যবহারে আপনার চেহারা খুবই লাবণ্যময় হয়ে উঠবেন।
নিম পাতা দিয়ে রূপচর্চা এবং ত্বকের যত্ন সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করতে চাইলে কমেন্ট করে বলতে পারেন বা কোনো বিষয়ে জানতে চাইলে আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করে দেখতে পারেন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url